Monday, December 5, 2022

আর ক্যাশ নয়, এবার লেনদেন হবে ডিজিটাল রুপে ।




গত ৭ অক্টোবর ২০২২-এ ডিজিটাল মুদ্রা সম্পর্কে একটি নয়া পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করেছে RBI-এর তরফে। ইতিমধ্যেই চলতি বছরের কেন্দ্রীয় বাজেটে ভারত সরকার একটি CBDC চালু করার বিষয়ে ঘোষণা করেছিল। CBDC হল ভারতে সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক ডিজিটাল কারেন্সি। (CENTRAL BANK DIGITAL CURRENCY) ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই ডিজিটাল কারেন্সির উপরে অধ্যয়ন করার জন্য, একটি বিশেষ ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করে। RBI পরীক্ষা মুলক ভাবে, দেশে এবার ডিজিটাল মুদ্রার পাইলট লঞ্চ শুরু করতে চলেছে। RBI-এর পাইলট ট্রায়ালের ফলাফলের উপর নির্ভর করেই, এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে দেশের সরকার।

E-rupee বা ডিজিটাল মুদ্রা! হল ভারতীয় মুদ্রার একটি ডিজিটাল রুপ। এটা আপনি ভারতীয় নোট বা কয়েনের মতো দেখতে পারেন না। কিন্তু এর অস্তিত্ব থাকবে ডিজিটাল ভাবে। RBI সম্ভবত এই মুদ্রার দু’টি ভার্সান জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। RBI দ্বারা প্রস্তাবিত পরোক্ষ মডেল অনুসারে, আপনি একটি ব্যাঙ্ক বা পরিষেবা প্রদানকারীর কাছে ওয়ালেট মারফত এই ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহার করতে পারবেন।

ক্রিপ্টোকারেন্সি অন্তর্নিহিত প্রযুক্তির (ডিস্ট্রিবিউটেড লেজার) ডিজিটাল মুদ্রা সিস্টেমের অংশগুলিকে প্রভাবিত করার সম্ভাবনা থাকলেও RBI এখনও এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে বিটকয়েন বা ইথেরিয়ামের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যক্তিগতভাবে সতন্ত্র। ভারতে যে ডিজিটাল মুদ্রার জারি কথা বলা হচ্ছে, তা RBI দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। তবে বিটকয়েনের মতই ব্যবহার হবে। তাই এটি ব্যবহারিক দিক থেকে বিটকয়েনের মতো কিছুটা স্বতন্ত্র হবে। তাই ডিজিটাল মুদ্রার প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে। এছাড়াও RBI-এর মডেল অনুসারে জানা গিয়েছে যে, RBI ডিজিটাল মুদ্রা ইস্যু করলেও বাণিজ্যিকভাবে ব্যাঙ্কগুলি এটি বিতরণ করবে।

এখন ভাবছেন আপনি কিভাবে এটি লেনদেন করবেন? ডিজিটাল মুদ্রার খুচরো সংস্করণ হবে টোকেন ভিত্তিক। বিস্তৃতভাবে এর অর্থ হল, আপনি প্রাপকের পাবলিক কি (অনেকটা ই-মেল-এর মত) খুঁজে নিয়ে আপনার প্রাইভেট কি (একটি পাসওয়ার্ড) ব্যবহার করে অন্যের কাছে অর্থ ট্রান্সফার করতে পারবেন। RBI-এর পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, তারা ডিজিটাল মুদ্রার সঙ্গে সুদের বিষয়টি যুক্ত করার পক্ষে নয়। কারণ এর ফলে, গ্রাহকেরা ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে তা ডিজিটাল মুদ্রায় রূপান্তর করতে পারেন। এমতাবস্থায়, ব্যাঙ্কগুলি বিপদে পড়বে। মূলত বর্তমানে ব্যাঙ্ক ট্রান্সফারের মাধ্যমে অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে প্রেরক এবং প্রাপককে চিহ্নিত করা যায়। এমতাবস্থায়, RBI-এর পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, তারা এবার ডিজিটাল মুদ্রার লেনদেনের ক্ষেত্রে “Partial Anonymity” র সিদ্ধান্ত নিতে পারে। অর্থাৎ, এর ফলে বড় লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যক্তিদের নির্দিষ্ট করা গেলেও ছোট লেনদেনের ক্ষেত্রে তা বেনামি হতে পারে।

ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহার করতে গেলে আপনি শুবিধাও পাবে। এমনিতেই লেনদেন করতে গেলে নগদ টাকা বা কয়েন বহন করতে হয়। এখানে তা থেকে আপনি অব্যাহতি পাবেন। এছাড়া RBI সামগ্রিকভাবে দেশের জন্য কিছু সুবিধাজনক পরিকল্পনা করেছে। যেমন আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, উদ্ভাবন এবং নগদ লেনদেনের খরচ কমানো ইত্যাদি।

ডিজিটাল মুদ্রার কাছে সবথেকে বড়ো চ্যালেঞ্জ হলো! ইন্টারনেট অফ বা একেবারে শ্লো হয়ে গেলে এটা স্তব্ধ হয়ে পড়বে। ট্রানজাকশনের সমস্যা হবে। তার জন্য RBI ডিজিটাল মুদ্রার জন্য অফলাইনেই কার্যকারিতার প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। যার অর্থ হল আপনি ইন্টারনেট ছাড়াই লেনদেন করতে পারবেন। তবে এটি সম্ভব হবে তখনই যেখানে একই মুদ্রা একাধিক ব্যক্তির কাছে স্থানান্তরিত হয়। এই ধরণের সমস্যাগুলি কমাতে বা কিছু প্রযুক্তিগত সমাধান খুঁজতে RBI কাজ শুরু করছে। 

No comments:

Post a Comment